ভারত-পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব পড়েছে বিনোদন অঙ্গনেও। এবার সেই উত্তাপ এসে লেগেছে বলিউড সিনেমা ‘সানাম তেরি কাসাম’-এর সিক্যুয়ালে। নির্মাতারা ঘোষণা দিয়েছেন, পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাওরা হোকেনকে সিনেমার দ্বিতীয় কিস্তি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
এনডিটিভি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই রোমান্টিক-ড্রামা সিনেমায় হর্ষবর্ধন রানের বিপরীতে অভিনয় করে বলিউডে অভিষেক করেছিলেন মাওরা। যদিও সিনেমাটি বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সিনেমাটি পায় দর্শকের ভালোবাসা। সম্প্রতি পুনরায় মুক্তির পর সিনেমাটি বাণিজ্যিক সফলতাও অর্জন করে, যা নির্মাতাদের সিক্যুয়াল তৈরির পথে এগিয়ে দেয়।
তবে গত মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। ভারতের পক্ষ থেকে চালানো প্রতিরোধমূলক অভিযানের পক্ষে বলিউড তারকারা প্রকাশ্যে সমর্থন জানালেও, পাকিস্তানি অভিনেতারা নীরব থাকেন বা বিরূপ মন্তব্য করেন—যা নিয়ে সৃষ্টি হয় বিতর্ক।
সেই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ‘সানাম তেরি কাসাম’-এর নির্মাতারা রাধিকা রাও এবং বিনয় সাপ্রু জানান, “সন্ত্রাসবাদ যে দেশের বিরুদ্ধেই হোক, তা নিন্দনীয়। যারা ভারতের মাটিতে কাজ করেছেন, দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছেন—তাদের নীরবতা আমাদের কষ্ট দিয়েছে। আমরা সবসময় দেশের পাশে। ‘দেশ আগে, সব পরে’—এই আদর্শেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
অন্যদিকে সিনেমার পুরনো নায়ক হর্ষবর্ধন রানেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “যদি আগের অভিনয়শিল্পীদের কেউ ফিরিয়ে আনা হয়, তাহলে আমি আর এই সিনেমায় থাকছি না।” তিনি আরও জানান, নিজের দেশের বিরুদ্ধে আসা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মাওরা হোকেন পাকিস্তানে ফ্যাশন ডিজাইনের ছাত্রী ছিলেন। ছোটবেলায় টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও পরে মডেলিং ও অভিনয়ে সুনাম অর্জন করেন। ‘সানাম তেরি কাসাম’ ছিল তাঁর প্রথম বলিউড সিনেমা।
বর্তমানে ভারতের প্রযোজক ও নির্মাতারা দেশীয় অবস্থানকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। অতীতে পাকিস্তানি শিল্পীদের বলিউডে নিষিদ্ধ করার ঘটনাও ঘটেছে। রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতির জেরে এসব সিদ্ধান্ত আবারও সামনে আসছে বলে মনে করছেন অনেকে।
খুলনা গেজেট/এনএম